প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে – প্রজেক্টর এর সুবিধা ও অসুবিধা (জানুন বিস্তারিত)

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে – আপনি কি কখনো ক্লাস রুমে প্রজেক্টর দিয়ে ক্লাস করেছেন কিংবা রাতের বেলা প্রজেক্টরে ফুটবল ম্যাচ দেখেছেন? অথবা প্রজেক্টর দিয়ে সিনেমা হলে সিনেমা দেখেছেন?

আমি একেবারে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে আপনি সিনেমা বা ক্লাস রুমে প্রজেক্টর নাম দেখলেও ফুটবল বিশ্বকাপের সময় প্রজেক্টর দিয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখেছেন। তো এত বড় একটা স্ক্রিনে চিত্র গুলো কে প্রদশর্ন করা কিংবা কিভাবে খেলা দেখতে পাচ্ছেন আপনার মনে কি কখনো এই প্রশ্ন এসেছে?

আপনার মনে যদি এখন এই প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে এই প্রশ্নের উত্তরটি পেতে একেবারে সঠিক স্থানেই প্রস্থান করেছেন। কেননা আমরা আজকের আর্টিকেলে প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি একটু মনযোগ সহকাড়ে দিয়ে পড়েন,

তাহলে প্রজেক্টর কি, প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে, প্রজেক্টরের প্রকারভেদ এবং প্রজেক্টর এর সুবিধা ও অসুবিধা জেনে নিতে পারবেন। তাহলে আসুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে প্রজেক্টর কি তা সংক্ষেপে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি।

প্রজেক্টর কি

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে তা জেনে নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে প্রজেক্টর জিনিস টা আসলে কি। প্রজেক্টর হচ্ছে মূলত একটি ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল যন্ত্র (Electro optical instruments)। যার মাধ্যমে কোনো চিত্র, ভিডিও, ডেটা, ছবি ইত্যাদি একটি বড় স্ক্রিনে প্রতিস্থাপনা করা যায়। সাধারণত ছোট খাটো কোন স্ক্রিনে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ কে ছবি বা ভিডিও দেখানো সম্ভব হয় না।

যখন বহু সংখ্যক মানুষ কে বড় কোন স্ক্রিনে ডিসপ্লে আকারে কোনো ছবি, ভিডিও বা কোন তথ্য প্রদর্শন করা হয় তখন প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। একটি প্রজেক্টর আউটপুট ডিভাইস (output device) হিসেবে কাজ করে। এটি সোর্স থেকে ব্লু রে প্রিন্ট (Blu Ray Print) কালেক্ট করে একটি চিত্র ধারণ করে এবং এর পাশাপাশি প্রজেকসন এর সহায়তায় বড় কোন স্ক্রিনে প্রতিভিম্ব তৈরি করে দেয়।

প্রজেক্টর যে কোনো ধরণের প্রজেন্টেশন বলুন আর ভিডিও দেখানো বলুন সব কিছু প্রদর্শন করতে সক্ষম। এটি যার উপরে প্রতিভিম্ব তৈরি করে সেটি মূলত হালকা রঙের হয়ে থাকে। আপনার কাছে একটি প্রজেক্টর থাকলে আপনি চাইলে রুমের দেয়ালে বড় স্ক্রিন তৈরি করে উপভোগ করতে পারবেন।

প্রজেক্টরের প্রকারভেদ

প্রজেক্টর সাধারনত বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। কোন ধরণের প্রযুক্তি এতে ব্যবহার করা হয়েছে আসলে সেটার উপর এর প্রকারভেদ নির্ভর করে। আমরা নিম্নে কয়েকটি প্রজেক্টর তুলে ধরলাম

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে

  • Liquid crystal display: এগুলো প্রজেক্টর মূলত ৩ টি LCD প্যানেল নিয়ে চিত্র তৈরি করে প্রদর্শন করে।
  • Digital Light Processing: এটি কাজ করে ৩ টি কালার নিয়ে যথাক্রমে – লাল, সবুজ ও নীল। তবে একটি ব্যবধান রয়েছে সেটা হচ্ছে সিংগেল চিপ ও থ্রি চিপ।
  • Laser projector: লেজার ব্যবহার করা হয় লাইট সোর্স হিসেবে। অনেক সময় ডিসপ্লেতে অনেক বেশি আলোর প্রয়োজন হয় তখন এই লেজার প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়।
  • Liquid crystal on silicon: এই প্রজেক্টরে মূলত LCD ও DLP বিদ্যমান থাকায় অনেক ভালো রেজুলেশনের চিত্র বা ভিডিও দেখাতে সক্ষম হয়।
  • Cathode ray tube: এটি মূলত আগেকার আমলের প্রজেক্টর।
  • Pocket projector: এগুলো প্রজেক্টর আকারে অনেক ছোট হয়ে থাকে ফলে যেখানে সেখানে কেরি করা বা যে কোন স্থানে যাতায়াত করা সম্ভব।
  • Home theater projector: আপনার বাসা বাড়িতে মুভি দেখার ইনভাইরনমেন্ট ক্রিয়েট করতে হলে এই ধরণের প্রজেক্টর গুলো বেশি উপযোগী।
  • Interactive projector: আর পরিশেষে এই প্রজেক্টর গুলো ক্লাস রুমে বা হল রুমে বেশি ব্যবহার করা হয়।

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে এই বিষয়ে আপনি ততখনই একটি ক্লিয়ার ধারণা পাবেন যখন সবার আগে প্রজেক্টর এর মেকানিজম বুঝতে পারবেন।

📌আরো পড়ুন 👇

সোর্স থেকে ইমেজ বা ভিডিও ক্যাপচার করে প্রজেক্টর তাকে দেয়া পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ধাপ এর মাধ্যমে সেগুলো কে প্রদর্শন করে যথা–

১. ইনপুট সিগনাল (input signal)

ইনপুট সিগনাল বলতে ভিডিও অথবা ইমেজ এর সোর্স ডেক্সটপ বা ল্যাপটোপ সোর্স থেকে প্রথমে HDMI, VGA বা অন্য কোনো ক্যাবল এর মাধ্যমে সংযুক্ত করে।

২. ইমেজ প্রসেসিং (Image processing)

কোন ডিভাইসে সংযুক্ত থাকাকালীন ভিডিও কে সয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে রূপান্তর করে, রঙ সংশোধন (Color correction) করে, সঠিক মাপের একটি রেজোলিউশন (resolution) তৈরি করে।

৩. লাইট সোর্স (light source)

লাইট সোর্স হচ্ছে মূলত প্রজেক্টর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। লাইট ব্যতিত কোনভাবে প্রতিভিম্ব তৈরি সম্ভব নয়। প্রজেক্টরে শক্তিশালী লাইট ব্যবহার করা হয়। যা মূলত পর্দা কিংবা দেয়ালে চিত্র ফুটিয়ে তুলে।

৪. ছবি তৈরি (picture made)

এটি বেশ কয়েকটি মেকানিজম ছবি ক্রিয়েট করার জণ্য কাজ করে থাকে যথাঃ

  • প্রথমটি হলো – DLP ( ডিজিটাল লাইট প্রসেসিং)
  • দ্বিতীয়টি হলো – LCD ( লিকুইড স্ক্রিস্টাল প্রদর্শন)
  • তৃতীয়টি হলো – LCoS ( লিকুইড ক্রিস্টাল অন সিলিকন)।

এগুলো আসলে প্রজেক্টর এর প্রকারভেদ অনুযায়ী ভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে।

৫. প্রজেকশন (Projection)

এরপর সেটাকে প্রদর্শন করার জন্য মানে ছবি তৈরি করা শেষে একটি লেন্স এর মধ্যে প্রজেকশন এর জন্য স্ক্রিনে অথবা দেয়ালে চিত্র ফুটিয়ে তুলে।

৬. এডজাস্টমেন্ট (adjustment)

আপনার দেয়াল কিংবা বা পর্দার পরিমাপ মোতাবেক প্রজেকসন কে কন্ট্রোল করার জন্য কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে সেখান থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন। কন্ট্রোল সিস্টেম এর মাধ্যমে আপনি সঠিক মাপের চিত্র পর্দার উপর প্রদর্শন করা সম্ভব হয়। এডজাস্টমেন্ট সঠিক ভাবে করলে পর্দায় দেখার জন্য প্রস্তুত হবে।

তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন প্রজেক্টর এর বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে সেগুলো জেনে নেই।

প্রজেক্টর এর সুবিধা

প্রজেক্টর এর বলতে গেলে অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে এটি শিক্ষা ক্ষেত্রে, বিনোদন ক্ষেত্রেসহ আরও নানান কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর কয়েকটি সুবিধা আমরা নিম্নে তুলে ধরেছি –

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে

১. বড় চিত্র ফুটিয়ে তুলে

মনে করুন বিশ্বকাপের সময় সবাইকে নিয়ে প্রজেক্টর দিয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখার ইচ্ছা হয়েছে। যদি আপনার কাছে একটি প্রজেক্টর থাকে তাহলে আপনি আপনার এলাকায় বড় বাড়ির পর্দা বানিয়ে ম্যাচ উপভগ করতে পারবেন। আবার চাইলে সবাই একসাথে সিনেমাও দেখতে পারবেন।

২. দাম তূলনামূলক কম

আপনি যদি একটি বড় সাইজের টিভি বা মনিটর কিনতে চান তাহলে আপনাকে অনেক টাকা খরচ করে কিনতে হবে। তবে আমার মনে হয় ফ্লাট স্ক্রিন এর জন্য প্রজেক্টর কম মূল্যে কিনতে পারবেন। এটি এখন বিভিন্ন দামে বাজারে পাওয়া যায়। আপনি চাইলে আপনার বাজেট অনুযায়ী একটি প্রজেক্টর ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার শিক্ষা ক্ষেত্রেও কাজে আসবে আবার পাশাপাশি বিনোদন ক্ষেত্রেও কাজে আসবে।

৩. অল্প জায়গায় রাখা যায়

আপনাররা খেয়াল করলে হয়তো দেখতে পাবেন যে প্রজেক্টর ব্যবহার করার জন্য আসলে খুব একটা বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। সামান্য একতা ছোট টেবিল থাকলে সেখানেই খুব সহজেই সেটাপ করে নিতে পারবেন।

৪. যেকোন স্থানে স্থানান্তর করা যায়

একটা বড় মনিটর যেখানে সেখানে বহন করা অনেক কঠিন সম্ভব হলেও বেশ ঝামেলার একটি বিষয়। তবে প্রজেক্টর আপনি একটি ব্যাগে করে যেখানে সেখানে বহন করতে পারবেন।

৫. যে কোনো ডিভাইসে ব্যবহারযোগ্য

প্রজেক্টর ব্যবহার করার জন্য আলাদাভাবে কোনো ইনপুট বা আউটপুট ডিভাইস এর দরকার পড়ে না। আপনি চাইলে আপনার বাসায় থাকা যেকোন ডিভাইস (কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ডিভিডি) দিয়ে খুব সহজে প্রজেক্টর ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি আপনি চাইলে আপনার মোবাইল ডিভাইস দিয়েও এটি কানেক্ট করে প্রজেক্টর ব্যবহার করতে পারবেন।

৬. সহজ সিস্টেম

অন্যান্য ডিভাইস এর তুলনায় প্রজেক্টরের ব্যবহার অনেকতা সহজ। আপনি চাইলে খুব সহজেই প্রজেক্টর ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ব্যবহার করতে আপনাদের খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না। তাছাড়াও আপনি যেই প্রজেক্টরই ব্যবহার করুন না কেন সেই প্রজেক্টরের টিউটোরিয়াল ভিডিও ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। এতে ব্যবহার করা আপনার জন্য আরও সহজ হয়ে যাবে।

তো আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে প্রজেক্টর এর সুবিধাগুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে পেরেছেন। এবার চলুন, প্রজেক্টর এর সামান্য কয়েকটি অসুবিধা রয়েছে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

প্রজেক্টর এর অসুবিধা

প্রজেক্টরের সুবিধার পাশাপাশি কয়েকটি অসুবিধা রয়েছে যেগুলো আমাদের জেনে রাখা উচিত। আপনি যদি একটি প্রজেক্টর কিনতে চান, তাহলে তার আগে সেটার সুবিধা অ অসুবিধা উভয় দিক জেনে শুনে ক্রয় করতে হবে। জেক্টরের অসুবিধা গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো –

  • প্রজেক্টর ডিভাইসকে আপনাকে সবসময় পরিস্কার করে রাখতে হবে। এর লেন্সে ময়লা জমে থাকতে দেওয়া যবে না। কেননা লেন্সে ময়লা কিছু জমে থাকলে অনেক সময় লেন্স নস্ট হয়ে যেতে পারে।
  • এতে আলাদা কোনো সাউন্ড সিস্টেম থাকে না। যার ফলে আপনাকে আলাদাভাবে একটি আউটপুট সাউন্ড সিস্টেম যুক্ত করতে হবে।
  • আপনি যদি অতিরিক্ত পাওয়ার ইউনিট ব্যবহার করেন তাহলে সেক্ষেত্রে দাম বেশি পড়বে এবং এর পাশাপাশি আপনার ইলেক্টেসিটি খরচ বাড়বে।

প্রজেক্টর কোথায় পাওয়া যায়

প্রজেক্টর মূলত সব ধরণের আইটি বা কম্পিউটার মার্কেটগুলতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে

  • ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে কম্পিউটার মার্কেট,
  • যমুনা ফিউচার পার্ক,
  • আইডিবি বসুন্ধরা সিটি,
  • ইস্টার্ন প্লাস,
  • স্টেডিয়াম মার্কেটে,
  • ইস্টার্ন প্লাজাসহ আরও অন্যান্য কম্পিউটার মার্কেট।

তাছাড়া আপনি চাইলে বিভিন্ন অনলাইন শপ থেকে এটি ক্রয় করতে পারবেন।

প্রজেক্টর ব্যবহারে সাবধানতা

প্রজেক্টর মুলত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, এজন্য এর ব্যবহারে আমাদেরকে অবশ্যই সাবধানতা মেনে চলতে হবে। মনে রাখাটা জরুরি যে, প্রজেক্টরের আলো যেখান থেকে বের হয় সেখানে যখন আপনার প্রজেক্টরটি চলমান থাকবে তখন সেখানে হাত দেওয়া যাবে না। এমনকি বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্যান্য সময়ও সেখানে হাত না দেওয়াই সবচেয়ে ভালো।

📌আরো পড়ুন 👇

এছাড়া শক্ত কোনো কিছু দিয়ে মুছবেন আন তানাহলে লেন্সে অনেক সময় দাগ পড়ে যেতে পারে। এটি খুব সাবধানতার সহিত আপনাকে নাড়াচাড়া করতে হবে। এটি চালু করার আগে আহে নিশ্চিত হতে হবে যে সব কিছু ঠিক আছে কিনা। আর প্রজেক্টরের কাজ শেষ হয়ে গেলে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে রাখতে হবে। অযথা প্রজেক্টোর চালু করে রাখা যাবে না।

প্রজেক্টর সম্পর্কে লেখকের মতামত

প্রজেক্টর কিভাবে কাজ করে সেই বিষয়ে আমরা আজকের আর্টিকেলে সব ধরণের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। আপনি যদি প্রজেক্টর ক্রয় করার চিন্তা ভাবনা করে থাকেন তাহলে আপনার চাহিদা এবং বাজেট  অনুযায়ী অবশ্যই টেকনোলজি যুক্ত প্রজেক্টর কিনে ব্যবহার করবেন।

যেহেতু আপনি চাইলেই সব ধরণের প্রজেক্টর দিয়ে সব ধরণের কাজ করতে পারবেন না সেহেতু প্রজেক্টর কেনার পূর্বেই ভালো ভাবে সুবিধা ও অসুবিধাগুলো জেনে শুনে কিনবেন। প্রজেক্টর নিয়ে আপনাদের যদি কোন ধরণের মতামত কিংবা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের কে মন্তব্য করে জানাতে ভুলবেন না। এতক্ষণ ধরে আপনার মূল্যবান সময়টুকু দিয়ে কাটিং টু ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment