আমাদের বাস্তবিক জীবনে কিছু কিছু মেডিসিন রয়েছে যেগুলো খুব বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খেয়াল করে দেখবেন প্রায় প্রতিটা বাড়িতে এই ডমপেরিডন ওষুধ দেখতে পাওয়ায় যায়। এজন্য হয়তো আপনারা এই ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ সে প্রসঙ্গে অনেক সময় গুগলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য পেতে চান। তাই আমরা আজকের এই পোষ্টে ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ প্রসঙ্গে আলোচনা করব।
তাই আপনার যদি এই মেডিসিন সম্পর্কে জানার একান্ত আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের আজকের এই পোষ্টে প্রদান করা এই তথ্যগুলো শুরু থেকে একেবারে মনোযোগ সহকারে পড়বেন। ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ তা আপনাদের উদ্দেশ্যে এখানে আলোচনা করা হলো।
উপস্থাপনা – ডমপেরিডন ১০
আগের দিনগুলোর চেয়ে বর্তমান সময়ের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমতে শুরু করেছে এর পাশাপাশি ভাবে মানুষের দেহের কার্যক্রম ও ক্ষমতা অনেকটাই কমে গেছে। কেননা এখন মানুষ আগের চাইতে খাওয়া দাবার বেশি খায় শারীরিক পরিশ্রম ঠিকভাবে করে না অনেক কম পরিশ্রম করে থাকে।
যার ফলে প্রায় মানুষের ওজন দিনের পর দিন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে করে বিভিন্ন অসুখ তাদের শরীরে বাসা বানাচ্ছে। তাই যেকোন রোগ বা সমস্যার ক্ষেত্রে আমাদের আগে সাস্থ্য সচেতনতা প্রয়োজন।
যাই হোক আমরা এই পোষ্টে আপনারা যারা ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ সেই সম্পর্কে জানতে এসেছেন অথবা এটা ডমপেরিডন কখন খেতে হয় তা যদি জানতে এসে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য অনেক উপকার হতে হতে চলেছে।
কেননা আজকের এই সম্পুর্ন আর্টিকেল জুড়ে আমরা ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ ও ডমপেরিডন কখন খেতে হয় এই বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি, ডমপেরিডন খেলে কি হয়, ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা, ডমপেরিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম, ডমপেরিডন বেশি খেলে কি হয় এবং ডমপেরিডন এর দাম কত তা আলোচনা করেছি।
ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ
ডমপেরিডন ১০ ট্যাবলেট মূলত যাদের বমি বমি ভাব রয়েছে তাদের এই সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আবার এতে থাকা উপাদান এর সাহায্যে পেরিস্টলিস এর গতি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও মাতৃদুগ্ধ উৎপাদন বাড়াতে এই ওষুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
📌আরো পড়ুন 👇
আবার যাদের আলসার বিহীন অজীর্ণ রােগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে বিশেষ করে এই ওষুধটি তীব্র বমিবমি ভাব এবং বমির প্রতিরােধ করতে বেশি ব্যবহার করা হয়। এটাতে যেগুলো উপাদান রয়েছে সেগুলো আমাদের বাস্তবিক জীবনে অনেক ভূমিকা রাখে।
ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি
ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি সেটা হয়তো আপনারা উপরের অংশ থেকে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। এখানে এই ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর আরও কার্যকরী মূলক নিয়ে আলোচনা করব। এই ওষুধ সেবন করলে বমি বমি ভাব দূর করার পাশাপাশি যাদের পেটের উপরের ভাগে ফাঁপা বােধ হয় তাদের এ ধরণের সমস্যার নিরাময় করতে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও যাদের পেট ভার বােধ এবং পেটের উপরের অংশে ব্যথা অনুভব হয় তারা সঠিক নিয়ম অনুযায়ী এই ওষুধ ব্যবহার করলে অনেক সময় সেই সাথে ব্যথাগুলো চলে যায়। অনেকের খাবার হজম করতে পারে না অথবা বদহজমের কারণে পেটে নানান ধরণের সমস্যা হয়ে থাকলে এটা ব্যবহার করা হয়।
ডমপেরিডন খেলে কি হয়
আমরা ইতিমধ্যে ডমপেরিডন ১০ কিসের ঔষধ ও এর কাজ কি সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন বিষয় হল আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করে থাকেন যে ডমপেরিডন খেলে কি হয়? তাহলে চলুন তাদের এই প্রশ্নটির উত্তরটিও জেনে নেই।
ডমপেরিডন খেলে কি হয় তা নতুনভাবে বলা কিছু নাই। এই ওষুধ সেবন করলে মূলত যাদের অতিরিক্ত বমি বমি ভাব হয় তাদের এই সমস্যা নিরাময় হয়ে যায়। আবার যাদের পাকস্থলী হতে খাবার উপরে উঠে আসে মোট কথা যাদের বধম হয় তারা যদি এই ওষুধ সেবন করে তাহলে তাদেরও এই সমস্যা নিরাময় হয়ে যাবে।
ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা
এখন আমরা এই অংশে ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতাগুলো জেনে নিব। ডমপেরিডন এই ওষুধটি মূলত সরকারি অনুমোদন একটি ওষুধ। এই ওষুধের বেশ কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে। মূলত এই ওষুধটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং এর পাশাপাশি ছোট বাচ্চাদের জন্যেও খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এই ওষুধের উপকারিতা গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
- হজম শক্তি বাড়ায়
- বমি বমি ভাব দূর করে
- গা গুলালে সেটা দূর করে
- ঢেকুর তােলা, পেট ফাঁপা বোধ দূর করে
- বুক জ্বলা অথবা শুধু বুক জ্বলা দূর করে
- আলসার বিহীন অজীর্ণ রােগ নিরাময় করে
- পেট ভার বােধ এবং পেটের উপরের অংশে ব্যথা দূর করে থাকে
উপরের উল্লিখিত উপকারিতাগুলো ছাড়াও এই ওষুধ আরও নানান কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আসলে যেকোন ওষুধ সেবনে সঠিক উপকারিতা পেতে হলে আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী সেবন করতে হবে। আর সঠিক নিয়ম অনুযায়ী সেবন না করলে আমাদের দেহে নানান ধরণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
তাই আমাদের উচিত যে কোন ওষুধ সেবন করার আগে একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া এরপর তার দেওয়া নিয়ম সেবন করা তাহলে আমাদের রোগ বালাইও দূর হয়ে যাবে। আমরা যদি ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করি তাহলে সুন্দর অ সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবো।
ডমপেরিডন কখন খেতে হয়
ডমপেরিডন ট্যাবলেট মূলত আমাদের দেহের জন্য একটি কার্যকরী ওষুধ এবং এর কাজ কি তা হয়তো আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন। আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে এই ওষুধের কার্যকারিতা গুলো তো জেনে নিয়েছি। এই ওষুধ কখন খাব বা ডমপেরিডন কখন খেতে হয়?
তাহলে আসুন, কথা না বাড়িয়ে আমরা এই প্রশ্নের উত্তরটিও জেনে নেই। এই ডমপেরিডন ওষুধ সেবনের সঠিক সময় হচ্ছে যারা প্রাপ্তবয়স্করা রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার ১৫ থেকে ২০মিনিট আগে খেলে সবথেকে বেশি কার্যকারিতা পাওয়া যায়।
এবং প্রয়োজনবােধে রাতে ঘুমাতে যাবার আগে সেবনযোগ্য। তবে যারা এই ওষুধটি যারা খাবার খেতে পারেন না তারা যদি এই ওষুধ সঠিক সময় ও নিয়ম মোতাবেক খেতে পারেন তাহলে আপনার মুখে খাবারের রুচি আগের চেয়ে উন্নতি হবে মানে এই ডমপেরিডন ওষুধটি মুখের রুচি নিয়ে আসতে সাহায্য করে।
তো আশা করি আপনারা এই অংশ থেকে ডমপেরিডন কখন খেতে হয় বা আপনি এই ওষুধটি কখন সেবন করবেন তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, ডমপেরিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়মগুলি জেনে নেই।
ডমপেরিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে এই ওষুধ সেবনের নিয়ম বা মাত্রা পরিবর্তন হতে পারে। মূলত যাদের প্রচূর পরিমাণে বমি বমি ভাব আসে তাদের ক্ষেত্রে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই ওষুধটি প্রতি ২০ মিলিগ্রাম করে ৮ ঘন্টা পর পর সেবন করা যেতে পারে। আবার যাদের খাবার ওঠে উঠে আসা ভাব হয়ে যায় এবং গিলতে পারে না অনেক জ্বালাপোড়া করে তাদের ক্ষেত্রেও প্রতি ৬-৮ ঘন্টা অন্তর অন্তর সেবন করা যেতে পারে।
এই ওষুধটি বেশি সেবন করলে ভুল করবেন। এটি আপনাকে সঠিক নিয়ম কানুন মেনে সেবন করতে হবে। তাহলে আপনার দেহের পক্ষে ভালো এবং দ্রুত সমস্যা নিরাময়ের কাজ করবে। তবে এই ওষুধ সেবন করার আগে আপনাকে প্রথমে একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এরপর তার দেয়া নিয়ম অনুযায়ী সেবন করতে হবে। আশা করছি ডমপেরিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম বুঝতে পেরেছেন।
* রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন’
ডমপেরিডন বেশি খেলে কি হয়
আপনারা হয়তো জানেন যে প্রায় প্রতিটা ওষুধেরই একটি নির্দিষ্ট সেবনমাত্রা রয়েছে। কেউ যদি সেই নির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে ওষুধ বেশি সেবন করেন তাহলে অবশ্যই তার দেহে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। ঠিক তেমনি ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। চলুন তাহলে ডমপেরিডন বেশি খেলে কি হয় তা জানি।
ডমপেরিডন বেশি খেলে যেসব সমস্যা বা ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষণ করা হতে পারে তা নিম্নে তুলে দেয়া হল
- মুখের শুষ্কতা
- পিপাসা
- মাথাব্যথা
- নার্ভাসভাব
- ঝিমুনী
- পাতলা পায়খানা
- ত্বকের লালচেভাব ও চুলকানী হতে পারে।
এছাড়াও ওষুধ বেশি সেবন করলে ক্লিনিকাল পরীক্ষায় অতিরিক্ত পিরামিডাল প্রতিক্রিয়া রােগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে। আবার ডমপেরিডান বেশি সেবনের ফলে অনেকসময় রক্তে প্রােল্যাকটিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনারা এই ওষুধ বেশি সেব করবেন না। অবশ্যই সঠিক নিয়ম মোতাবেক ও একজন ভালো রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন।
ডমপেরিডন এর দাম কত
ডমপেরিডন মূলত বায়োজেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (Biogen Pharmaceuticals Limited) কোম্পানি বাজারজাত করে থাকে যার জেনেরিক বা গ্রুপ নাম হচ্ছে ডমপেরিডন ম্যালিয়েট (Domperidone Maleate) আমরা হয়তো অনেকেই মুখের রুচির জন্য বা বমি ভাব দূর করার জন্য এই ট্যাবলেটটি খেয়ে চান।
কিন্তু এই ডমপেরিডন ট্যাবলেটের দাম কত সেই বিষয়ে জানা নেই। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনার জানার সুবিধার জন্যই পোষ্টের এই পাঠে আমরা এই ওষুধের সঠিক দাম উল্লেখ করেছি। মূলত এই ওষুধের দাম অল্প টাকায় পাওয়া যায়। প্রতি পিচ ডমপেরিডন ট্যাবলেট এর মূল্য মাত্র ২ টাকা। আর এক পাতাতে ১০ পিচ থাকার যার মূ্ল্য ২০ টাকা। আর সিরাপ ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়।
ডমপেরিডন খাওয়ার আগে না পরে
আপনারা উপরের অংশ থেকে হয়তো ইতিমধ্যে ডমপেরিডন এর দাম কত তা জেনে নিয়েছেন। এবার আমরা জানবো ডমপেরিডন খাওয়ার আগে না পরে খেতে হয়। ডমপেরিডান ট্যাবলেট মূলত খাবার গ্রহনের ২০ থেকে ৩০ মিনিট আগে সেবন করতে হয় অথবা বেশি ভাল হবে রাতে ঘুমাতে যাবার পূর্বে সেবন করা।
আমরা অসুস্থ হলে সুস্থ হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন করে থাকি। আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা নিজে নিজে ওষুধ সেবন করে যা ঠিক না। আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে। কেননা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই সেবন করা অতিব জরুরী।
ডমপেরিডন সম্পর্কে লেখকের মতামত
সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে হলে আমাদের অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং সবসময় যে কোন শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে নিজেকে সচল রাখতে থাকতে হয়। আমাদের দেহের বিভিন্ন হরমোন লেভেলের প্রভাব অথবা রক্তে চর্বির নিয়ন্ত্রণের কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে নজর দিতে হবে এবং সুষম খাদ্য খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে দেখবেন আমাদের অনেক অসুখ দেহ থেকে দূর হয়ে গিয়েছে। তেমনি ভাবে বাকি জীবন সুস্থভাবে কাটাতে পারছি। মনে রাখবেন সবসময় কিন্তু ওষুধ খেলেই সব ধরণের রোগ নিরাময় হয় না। কিছু রোগ ঘরোয়া বা প্রাকৃতিকভাবেও নিরাময় করা যায়।