আপনি কি ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি তা জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি এখন একেবারে সঠিক সাইটে প্রবেশ করেছেন। কেননা ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি তা আলোচনা করার পাশাপাশি ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম, ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া, ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়, ইয়া ওয়াদুদু এর আমল এবং ইয়া ওয়াদুদু পড়ার ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করব। তো আপনি এগুলি বিষয়ে জানতে চান তাহলে এই পোষ্টটি শুরু থেকে একেবারে শেষ অবদি একটু মনযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
ইয়া ওয়াদুদু পড়া প্রতিটা মুসলীম জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এজন্য মূলত আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ সম্পর্কে আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তো আপনি যদি ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি? ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি একটু গুরুত্ব সহকাড়ে পড়ে এই সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্যগুলি জেনে নিন।
উপস্থাপনা – ইয়া ওয়াদুদু
ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি, এই দোয়া পড়লে কি হয়, এর ফজিলত ও আমল সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। ইয়া ওয়াদুদু নিয়মিত পাঠ করলে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আমাদের মহব্বত প্রকাশ হবে। এটি আপনি যদি নিয়মিত পাঠ করেন তাহলে আপনার দম্পত্তি জীবনে ঝগড়া ঝামেলা দূর হয়ে মহব্বতে পরিণত হবে।
মহান আল্লাহ তা’আলার ৯৯ টি গুণবাচক নামের মধ্যে ইয়া ওয়াদুদু একটি। তাই আপনি যদি নিয়মিত এই আমলটি করতে পারেন তাহলে নিশ্চয় আপনার সংসারে সুখ শান্তি বিরাজ করবে।
বিশেষ করে যেসব স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথায় কথায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে তারা যদি এই আমলটি নিয়মিত করেন তাহলে এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এই আমলটি কিভাবে করতে হয় বা ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম আপনারা নিচের বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।
তাহলে তাদের মধ্যে থাকা মনোমালিন্য ভাবটা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও এই নামের ফজিলত অনেক বেশি। এ পোষ্টে এই গুণবাচক নাম সম্পর্কিত বিভিন্ন অনেক বিষয় আলোকপাত করা হবে। তাহলে চলুন আর বেশি দেরি না করে প্রথমে ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি তা দিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।
ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ
ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ আপনারা কি জানেন? আমরা অনেকেই হয়তো এই আমলটি করে থাকি কিন্তু জানি না যে এটার অর্থ সম্পর্কে। ইসলামে এমন অনেক শব্দ রয়েছে যেগুলোর অর্থ সম্পর্কে আমরা ঠিকভাবে জানিনা, আবার অনেকে এগুলো শব্দের সাথে পরিচিত কিন্তু এগুলোর অর্থ জানিনা।
📌আরো পড়ুন 👇
ইয়া ওয়াদুদু হচ্ছে মূলত আরবি শব্দ। আর এর অর্থ হচ্ছে অধিক মহব্বতকারী। তাই কেউ যদি এটি নিয়মিত পড়ে তাহলে মহান আল্লাহ তা’আলার প্রতি আপনার মহব্বত বিকাশ ঘটবে। ইয়া ওয়াদুদু ১০০০ বার পাঠ করে খাদ্যর ওপর দম করে স্বামী স্ত্রী দুজনেই একত্রে বসে খাবার এতে ভিতরে থাকা বিভিন্ন ঝগরা-বিবাদ ও বিভিন্ন ঝামেলা দূর হয়ে মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।
ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া
আপনারা হয়তো অনেকেই অনেক আমল ও দোয়া সম্পর্কে পরিচিত রয়েছেন। আবার অনেকেই বেশ কিছু জরুরি আমল রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জানি না। যার ফলে আমরা অনেকেই নেকি পাওয়ার দিক থেকে পিছিয়ে আছি। যেমন ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া এই বিষয়ে আপনি কি জানেন? ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ হচ্ছে মূলত অধিক মহব্বতকারী।
বর্তমান সময়ে এমন অনেক স্বামী স্ত্রী রয়েছেন যাদের সংসারের মধ্যে নানা রকমের মনোমালিন্য ঝামেলা চলতেই থাকে। তারা সেসময় যদি এই দোয়াটি পাঠ করে তাহলে তাদের মধ্যে কার মনোমালিন্য ঝামেলা দূর হয়ে যাবে। প্রিয় নবী রাসূল (সাঃ) এক হাদিসে ইরশাদ করেন, ” যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ৯৯ টি গুণবাচক নাম গুলো নিয়মিত জিকির করবে সে জান্নাতে যাবে।
এই গুণবাচক নাম গুলোর ভিন্ন ভিন্ন আমল এবং এর ফজিলত অনেক বেশি। মহান আল্লাহ তা’আলার গুণগত নাম গুলোর মধ্যে “ইয়া ওয়াদুদু ” অন্যতম একটি। এই পবিত্র নামের আমল নিয়মিত করলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে থাকা অমিল ও দূরত্ব কমে যায়। আল্লাহর গুণবাচক নাম ইয়া ওয়াদুদু এর ফজিলত অনেক বেশি।
আল ওয়াদুদু অর্থ হচ্ছে মূলত প্রকৃত বন্ধু। আরও সহজ ভাবে বলতে গেলে–
- যে তার অনুগত
- তার দিকে ফিরে আসে
- তিনি তাকে ভালোবাসে
- তাদের প্রশংসা করেন এবং
- তাদের প্রতি তিনি ইহসানকারী।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ থেকে শুরু করে তাদের মধ্যে অমিল ও অসন্তোষ কাজ করলে তাদের জন্য অনেক ফজিলত এই পবিত্র নাম ইয়া ওয়াদুদু। এর ছোট্ট আমলটি যদি আপনি আপনার দম্পত্তি জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম
মহান আল্লাহর নামগুলি সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। ঈমান ও ইখলাসের সহিত মহান আল্লাহর নাম গুলো সম্পর্কে অবগত হতে হবে এবং এর পাশাপাশি ফজিলত সম্পর্কে জানতে হবে। আল্লাহ কে যখন তার বান্দা জানবে ও ঠিকভাবে চিনবে তখন তার অনুগত্যর জন্য পরিশ্রম করবে।
তার নিষেধাক্ষা থেকে নিজেদের বিরত রাখবে। মহান আল্লাহকে ভালোভাবে জানলে তার প্রতি সম্মানবোধ ও ভালোবাসা বেরে যাবে এর সাথে হাদিসের সম্পর্ক স্থাপিত হবে। তিনি প্রেমময়, ক্ষমাশীল এবং সুমহান আরশের অধিপতি। ওয়াদুদু শব্দটির অর্থ হচ্ছে মহব্বতকারী।
তার প্রতি খাঁটি ভালোবাসার অধিকারক। তিনি প্রতিটা বান্দাদের প্রতি খুবই স্নেহশীল। তিনি সকলে নিয়ামত দিয়ে ডুবিয়ে রেখেছেন। তো মহান আল্লাহ তায়ালার এই নামটি পড়ার নিয়ম বা আমল করার নিয়ম জেনে নিতে হবে। আসুন, তাহলে ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
- স্বামী স্ত্রী উভয়ে ইয়া ওয়াদুদু ১০০০ বার পাঠ করে খাদ্যর ওপর দম করে একত্রে বসে একই পাত্রে খেতে হবে। এতে করে তাদের মধ্যে থাকা ঝগড়া-বিবাদ দূর হয়ে মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।
- স্বামী-স্ত্রী তাদের সন্তানদেরকে ইয়া ওয়াদুদু ১০০১ বার পাঠ করে মিষ্টির ওপর দম করে খাওয়াতে হবে তাহলে এতে করে ময়াহ্ন আল্লাহর ফরজের প্রতি সন্তানগুলো বাধ্যগত হবে।
- শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী এবং নিজের সন্তানদের জন্য নয় বরং আপনার বন্ধুত্ব খারাপ দিকে চলে গেলে আপনি যদি নিয়ম (ইয়া ওয়াদুদু ৫১ বার পাঠ করে খাদ্যদ্রব্য কে ফু দিয়ে খেতে পারেন তাহলে এক্ষেত্রে পরস্পরের বন্ধুত্ব সুদৃঢ হবে।
উপরের উল্লিখিত নিয়ম মোতাবেক এই দোয়াটি পাঠ করলে তাহলে দেখবেন মহান আল্লাহ আপনাদের মধ্যে থাকা মনের অমিল দূর করে সেটি মহব্বতে পরিনত করবে ইনশাল্লাহ।
ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়
আমাদের সমাজে কিন্তু অনেকের সংসার জীবনে দেখা যায় যে তাদের মধ্যে প্রায়ই বনিবানা বা মিল মহব্বত হয় না। দম্পত্তি জীবনে বিভিন্ন ধরণের ঝামেলা, অসন্তোষ , ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি লেগেই থাকে যার ফলে অনেকের সংসার টিকছে না। এছাড়াও অনেকের সংসারে বিভিন্ন ধরণের অশান্তি লাগতেই থাকে।
📌আরো পড়ুন 👇
আমরা এই সকল অশান্তি থেকে রেহাই পাব যদি ইসলামিক উপায়ে আমরা জীবন যাপন করি। কিন্তু আমরা অনেকে ইসলামিক উপায় অবলম্বন না জানার কারণে এই উপকারি আমল করতে পারি না। এতে করে আমাদের সংসারের ঝামেলা ও আমিল দূর হয় না।
আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়? মূলত এজন্য আমরা আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছি। আল্লাহ তায়ালা ৯৯ টি নামের মধ্যে ইয়া ওয়াদুদু অর্থ হল প্রেমময় বা মহব্বতকারী। মহান আল্লাহ তা’আলার প্রেমময় সত্তা, তিনি প্রিয়জনদের প্রতি স্নেহশীল এবং উপচে পড়া ভালবাসা বিদ্যমান রয়েছে।
তিনি সকল মুমিনদেরকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। মুমিনরা যদি মহান আল্লাহ তাআলার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তাহলে তিনি সকল ভুল ক্ষমা করে দেবেন। প্রতিটা বান্দাকে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন লাভ করার জন্য তার হুকুম মেনে জীবন যাপন করলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হয়ে যাবেন। যদি কারও দম্পত্তি জীবনে সবসময় ঝগড়া-বিবাদ কিংবা অনেক অমিল থাকে তাহলে এই দোয়া বা আমল করতে হবে।
কারও দম্পত্তি জীবনের ঝগড়া-বিবাদ ও তাদের মধ্যে অমিল দূর করার ক্ষেত্রে আপনাকে ১০০১ বার ইয়া ওয়াদুদু নিয়মিত পাঠ করতে হবে এবং এর পাশাপাশি তাদের একইসঙ্গে যে খাবার খাবে সেই খাবার ফু দিয়ে সেই একই থালায় খেতে হবে। তাই বলা যায় ইয়া ওয়াদুদু এভাবেই পাঠ করলে দুজনের মধ্যে মিল মহব্বত বেড়ে যাবে এবং এর পাশাপাশি নিজেদের সকল ফ্যাশাদ দূর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
ইয়া ওয়াদুদু পড়ার ফজিলত
মহান আল্লাহ তা’আলার অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে। সেগুলো নাম সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানি না এবং সেগুলোর ফজিলত সম্পর্কেও জানি না। মহান আল্লাহ তা’আলার ৯৯ টি গুণবাচক নামের ফজিলত সম্পর্কে না জানার ফলে আমরা নেকির দিক থেকে অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি।
আজকের আমরা ইয়া ওয়াদুদু নামের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করবো। এই ইয়া ওয়াদুদু নামের অর্থ হচ্ছে প্রকৃত বন্ধু। যে তার প্রতি অনুগত লাভ করে ও তার দিকেই সবসময় ফিরে আসে, তিনি তাকেই অনেক ভালবাসে, একমাত্র তাদেরই প্রশংসা করে থাকেন এবং তাদের প্রতি তিনি ইহসানকারী।
এই নামের অনেক ফজিলত রয়েছে যদি কারও দম্পত্তি জীবনে বা সংসার জীবনে মিল মহব্বত না থাকে বা উভয়ের মাঝে বনিবানা না হয় কিংবা তারা একজন আরেকজনের প্রতি অসন্তুষ্টিত হয়।
তখন যদি তারা মহান আল্লাহ তাআলার এই পবিত্র গুণবাচক নাম ইয়া ওয়াদুদু ১০০১ বার পাঠ করে কোন খাবারে ফু দিয়ে উভয়ই একসাথে খায় কিংবা অন্য কেউ যদি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে তাহলে মহান আল্লাহর রহমতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যেই আগের মত আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
তাই যাদের সংসার জীবনের মধ্যে অমিল অসন্তোষ বোধ কাজ করছে। তারা যদি আল্লাহ তায়ালার এই পবিত্র নাম ইয়া ওয়াদুদু এর ছোট্ট আমলটি নিয়িমিত করেন তাহলে একে অপরের উপর ভালোবাসার মেল বন্ধনের বহিঃপ্রকাশ করতে পারবে।
ইয়া ওয়াদুদু সম্পর্কে লেখকের মতামত
ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি সেই বিষয়ে আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত তুলে ধরলাম। মহান আল্লাহর ৯৯ টি গুণবাচক নামের মধ্যে ইয়া ওয়াদুদু একটি। তাই আপনি যদি নিয়মিত এই আমলটি করতে পারেন তাহলে নিশ্চয় আপনার সংসারে সুখ শান্তি বিরাজ করবে আমরা ইতিমধ্যে ইয়া ওয়াদুদু সম্পর্কে বিভিন্ন ধরণের তথ্যাদি জেনে নিয়েছি।
যেমন ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি, ইয়া ওয়াদুদু কিসের দোয়া, ইয়া ওয়াদুদু পড়ার নিয়ম, ইয়া ওয়াদুদু পড়লে কি হয়, ইয়া ওয়াদুদু পড়ার ফজিলত ইত্যাদি। এই পোষ্টে কোন ভুল হয়ে থাকলে তা কমেন্ট বক্সে আমাদের জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
আপনার যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা আপনার প্রশ্ন কিংবা মতামতের উত্তর দেওয়ার অবশ্যই চেষ্টা করবো। ইয়া ওয়াদুদু এর অর্থ কি সম্পর্কিত এই পোষ্টিটি এতক্ষণ ধরে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।