মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত কোনটি

ইসলাম নিশ্চয় রহমত ও ন্যায়ের ধর্ম। ইসলাম মানুষকে অন্ধকার পথ থেকে আলোর পথে নিতে আসতে এবং মানুষের হেদায়েতের উন্নতির পথে আনার জন্য চেষ্টা করে। এই ইসলাম ধর্মে রয়েছে প্রেমময়তা, দয়া ও নিয়ামত। ইসলাম ধর্ম হচ্ছে এমন একটি ধর্ম যা নিজ ধর্মের মানুষদের সম্মানের চোখে দেখে, অপরদিকে অন্য ধর্মের ব্যক্তিরকেও মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধার চোখে যোগ্য মনে করে।

ইসলাম একজন অমুসলমানকে অবশ্যই ধর্মীয় স্বাধীনতা দিয়ে থাকে। তবে শুধু ধর্মীয় স্বাধিনতা দেয়নি বরং তাদের সাথে সৌজন্যবোধ, ঐক্যবদ্ধতা, সামাজিক অংশীদারি ও মেলামেশা করতেও নিষেধ করেনি।এজন্য আমাদের সকলকেই ইসলামের খুটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা জরুরি।

তো আপনি কি মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত কোনটি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য আমাদের এই পোষ্টটিতে এসেছেন? তাহলে আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়গুলি আপনার জন্য উপকার হতে চলেছে।

কেননা আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত সম্পর্কে জানার জন্য গুগলের সন্ধান করে থাকেন। এজন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই মুসলমান-অমুসলমান সম্পর্ক সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আপনি যদি মুসলিম ও অমুসলিম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে না থাকেন, তাহলে অবহেলা না করে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকাড়ে পড়ুন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা প্রথমে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত কোনটি সেই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিব।

মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত কোনটি

মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত হচ্ছে মূলত নামাজ। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেন, মুসলমান-অমুসলমান, মুশরিক-কাফের এবং মুমিন এটার প্রথমতম বাহ্যিকভাবে দৃশ্যমান পার্থক্য হচ্ছে নামাজ। সুতরাং মুসলমান আজান দিলে মসজিদের দিকে অগ্রসর হবেন কিন্তু অমুসলীম আজান হলে মসজিদের দিকে অগ্রসর হবেন না।

📌আরো পড়ুন 👇

এটা মূলত মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে একেবারে প্রধানতম পার্থক্য। কিন্তু অন্য কোন কিছু দিয়ে এভাবে তুলনা করা যায় না। আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যাদের দাড়ি, বড় কাপড়, টুপি পরিধান করে থাকি। কিন্তু যদি ঈমানের কষ্টিপাথরে তাকে পরিক্ষা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে ঈমানের কোন গুনাগুন পরিলক্ষিত হয়নি।

কিন্তু তার মধ্যে লেবাজ পোষাকের সবকিছু ঠিক ঠাক আছে। আসলে আমাদের ঈমান রাখার জায়গা কোনটা বলুন তো?আমাদের ঈমান রাখার জায়গা হচ্ছে অন্তর। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, তাদের অন্তরের মধ্যে ঈমানের গুনাগুন অন্তরে প্রবেশ করে নাই।

ঈমানের জায়গাটা অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত গড়ে তোলা। বাহ্যিকভাবে সেই বিষয়টি প্রমান করার কোন কায়দা নেই। একজন অমুসলিম ভাই যদি মুখে দাড়ি, বড় কাপড় পরিধান করে এবং মাথায় টুপি পরিধান করে তাহলে কিন্তু তাকে বুঝতে পারা কঠিন যে সেই ভাইটি মুসলমান নাকি অমুসলমান।

এজন্য আমাদের প্রিয়নবী বলেন, একজন মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে প্রথমতম বাহ্যিকভাবে দৃশ্যমান পার্থক্য হচ্ছে নামাজ। তো আশা করছি কোনটি মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত তা জানতে পেরেছেন।

মুসলমান-অমুসলমান সম্পর্ক সংক্রান্ত নীতিমালা

আপনারা অনেকেই জানতে চান যে, আমরা ইসলামি পরিভাষায় মুসলমানেরা অমুসলীমদের প্রতি কোন চোখে দেখবে এবং অমুসলমানদের সাথে আমরা কেমন আচরণ করব? তাহলে চলুন ইসলামের শরীয়তের দৃষ্টিকোনে এই বিষয়ে কি বলা হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া যাক।

ইসলাম হচ্ছে মূলত রহমত ও ন্যায়ের একটি ধর্ম। ইসলাম প্রতিটা মানুষের প্রতি হেদায়েত এবং অন্ধকার পথ থেকে আলোর পথে ফিরে আনার চেষ্টা করে। প্রতিটা মুসলমান জাতি বিশ্বাস করবে যে, কোন অমুসলিম ব্যক্তির উপর কোন ধরণের জুলুম করা সম্পূর্ণ নাজায়েয বা নিষিদ্ধ।

সুতরাং কোন অমুসলিম ব্যক্তির উপর শারীরিকভাবে কোনোভাবেই আক্রমণ করা যাবে না এমনকি কোন ধরণের আক্রমণ করার চেষ্টাও করবে না। এছাড়া কোন অমুসলিম ব্যক্তির উপর ভয় প্রদর্শন করবে না, নিজের অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করবে না, তার সম্পদ আত্মসাৎ করবে না।

তার রাখা আমানতকে অস্বীকার করবে না ও তার মজুরি কিংবা পারিশমিক থেকে তাকে কখনই বঞ্চিত করবে না। তার কাছে কোন ক্রয় করলে তা বিনিময়ে অবশ্যই মূল্য পরিশোধ করবে।

আর অমুসলিম ব্যক্তির সাথে যদি কেউ যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করে তাহলে তাকে অবশ্যই সেই ব্যবসার লাভ বা প্রফিট প্রদান করবে। আশা করছি মুসলমান-অমুসলমান সম্পর্ক সংক্রান্ত নীতিমালাগুলো জানতে সক্ষম হয়েছেন।

অমুসলিমদের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কী?

এ পর্যায়ে আমরা জানবো যে অমুসলিমদের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তের বিধান আসলে কী? ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে বলেন যে, অমুসলিমদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে ফরজে কেফায়া। অনেকে বলেন যে নিজের সাধ্য মোতাবেক ফরজে আইন। আমরা এক্ষেত্রে ফরজে কেফায়াই ধরলাম।

তবে এ বিষয়ে জেনে নেওয়ার আগে প্রথমে আমাদের ফরজে কেফায়া কি বা কাকে বলে? সেই বিষয়ে অবগত হতে হবে। ফরজে কেফায়া হচ্ছে এমন হুুকুম বা কোন করনীয় কাজ, যা প্রতিটা মুসলীম জাতির উপর ফরজ। তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তখনই কোনো শাস্তিপ্রাপ্ত হবে না যখন সবার পক্ষ থেকে কেউ যদি ওই কাজ আদায় করে দেয়। এর সুবিধা হলো সবার পক্ষ থেকে এটি পরিপূর্ণ আদায় হয়ে যাবে।

ফরজে কেফায়া বলতে মূলত জানাজার নামাযকে বোঝানো হয়। জানাজার নামায সম্পূর্ণ করার জন্য মিনিমাম ৪জন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। জামাতের জন্য একজন ইমাম হলে, আর বাকি তিনজন যারা থাকবে তারা হবে মুক্তাদি। দাফন করার জন্য জন্য দু’জ্ন থাকবে, কবরের উপরে থাকার জন্য দু’জন থাকবে এবং কবরে নামার জণ্য দু’জন মুরদাকে রাখবে।

মোট কথা, কাফন এবং দাফন সম্পন্ন করতে হলে মিনিমাম চারজন লোকতো লাগবেই। তাহলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে যে ফরজে কেফায়া আদায় হবে। আর যদি ফরযে কেফায়া সম্পূর্ণভাবে বা পরিপূর্ণভাবে আদায় করা না হয় তবে ওই এলাকার সবাই গুনাহগার হয়ে থাকবে এবং পার্শ্ববর্তী সকল মুসলমানের উপর এটি পূরণ করার দায়িত্ব পড়বে ।

সম্মানিত পাঠক! আপনা্দের কাছে আমার প্রশ্ন রয়েছে সেটি হচ্ছে,আপনার এলাকায় কি এমন কোন ৪ জন ব্যক্তি আছে, যারা সবসময় অমুসলিমদের দাওয়াত দেয়? আপনার এলাকায় যদি এমন ব্যক্তি না থেকে থাকে তাহলে আপনার পুরো জেলার মধ্যে এমন ৪ জন ব্যক্তি খুজে পাওয়া যাবে কি?

যারা সবসময়ের জন্য সমস্ত মুসলীমদের পক্ষ নিয়ে অমুসলিমকে দাওয়াত দিচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর যদি ‘না হয়ে থাকে তাহলে আমরা কি এই ফরজে কেফায়া আদায় পালন করছি বলে কি মনে হচ্ছে আপনার? যদি ফরজে কেফায়া আদায় করে না থাকি তবে কি আমরা প্রতিনিয়ত গুনাহগার হচ্ছি না?

অবশ্যই হচ্ছি। আমরা সামনে আরও কতদিন এই গুনাহ মাথায় নিয়ে ঘুরবো বলুন? আমাদের মাঝে কোনো ব্যক্তি যদি দায়িত্ব নিয়ে সমষ্টিভাবে দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তি নিজে এই গুনাহ থেকে রক্ষা পাবে। তবে আমরা কিন্তু বলতএ গেলে সমষ্টিগতভাবে সবাই গুনাহগার হব।

তো প্রিয় ভাই-বোনেরা! এখনো কিন্তু সময় রয়েছে, আসুন, আমরা সবাই মিলে উদ্যেগ নিয়ে অমুসলিম ভাইদের দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করি এবং নিজে এই গুনাহ থেকে বাঁচি, অপরকেও বাঁচাই। আর আমরা পরস্পরে এককভাবে একে অন্যকে এ কাজে শামিল করানোর উদ্বুদ্ধ করি।

মুমিন ও‌ মুসলিমের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি?

আপনারা অনেকেই গুগলের কাছে প্রশ্ন করে থাকেন কিংবা অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে মুমিন ও‌ মুসলিমদের মাঝে কোন পার্থক্য রয়েছে কিনা? সাধারনত একজন মুমিন ও মুসলমানের মাঝে খুব একটা জটিল কোনো প্রকারের পার্থক্য নাই। এটা শুধুমাত্র আমাদের বিভিন্ন সমাজগুলোতে প্রচলিত একটি রীতিনীতির ব্যবহার বলা চলে।

📌আরো পড়ুন 👇

তবে মুমিন মুসলমান এবং মুসলিম এ ২ টির মাঝে মৌলিকভাবে দৃষ্টিগত পার্থক্য রয়েছে। সাধারনত মুমিন শব্দটি এসেছে ঈমান নামক শব্দ থেকে। এই ঈমানের যে দাবি রয়েছে, সেগুলো যেই ব্যক্তি পরিপূর্ণরূপে ভালোমতো পালন করবেন, তিনি হলেন মুমিন।

আর মুসলিম নামক শব্দটি এসেছে মূলত ইসলাম শব্দ থেকে। ইসলামের দাবি ও রীতিনীতি যথাক্রমে যিনি পূরণ বা পালন করবেন, তিনি হলেন মুসলিম। যদি আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদিস দেখি, তাহলে আমরা আরও ধারণা পেয়ে যাব যে ইসলামের পরিচয় কিংবা ইসলামের বিধি-বিধান রাসুল (সা.) কীভাবে করেছেন।

ইসলামের মোট ৫টি মৌলিক ভিত্তি করে আমাদের নবী করীম (সা.) ইসলামের পরিচয় করে দিয়েছেন।
মূলত তিনিই হচ্ছেন প্রকৃত মুসলিম যিনি ইসলামের এই ৫টি আরকান নিজের জীবনের সাথে বাস্তবায়ন করবেন। যদি কেউ নিজেকে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ বা উপস্থাপনা করতে চান, তাহলে এই কাজগুলো আমাদের বাধ্যতামূলক করতেই হবে।

দ্বিতীয় ধাপটি হচ্ছে মূলত ঈমানের ধাপ। মহান আল্লাহর বান্দা যখন প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে বা অন্তরে সমস্তকিছুর মাধ্যমে যখন ইসলামকে নিজের বাস্তব জীবনে দ্বীন হিসেবে মান্য করবেন তখন তিনি ঈমানকে তাহকিক করবেন।

ইমানের যে ছয়টি রোকন বা স্তম্ভ আছে, সেগুলো পরিপূর্ণরূপে মেনে নিতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে, কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর বিপরীতে কোনো কাজ করতে পারবে না। এগুলো সব নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার নামই হলো মুমিন। আশা করছি আমাদের নবী করীম (সাঃ) এর হাদিসটি জেনে এ বিষয়ে একটি ক্লিয়ার ধারনা পেয়েছেন।

ইসলামী রাষ্ট্র কী অমুসলিমদর অধিকার দেয় না?

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে ইসলামী রাষ্ট্র অমুসলিমদর অধিকার দেয় কিনা? ইসলাম মূলত অমুসলিম মানুষদের প্রাপ্য অধিকার দিয়েছে। মুসলমানরা যখন কোন দেশ জয় করেছে সেই সময় সে দেশের বাসিন্দাদের সাথে বিভিন্ন চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন যার ফলে অমুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়।

রাষ্ট্রপ্রধান যখন অমুসলিমদের সাথে একটি বিশেষ চুক্তি করেন, ঠিক তখন সেই চুক্তি প্রতিটা মুসলিমদেরকে মানতে হয়। সেই চুক্তিতে অমুসলিমদের প্রতি অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

রাষ্ট্রের কাছে কোন অমুসলিমকে হত্যা করা বা নির্যাতন করা অত্যন্ত ভয়াবহ কাজ; এমন কাজ করতে ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। আব্দুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আমাদের প্রিয়নবী রাসূল (সা:) বলেছেন যিনি কোন জিম্মীকে শিরশ্‌ছেদ করে, তিনি জান্নাতের ঘ্রাণ পাবে না।

হাদিসে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাষ্ট্রের সাথে চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমকে কোন কারণ ব্যতিত হত্যা করা ইসলামে অত্যন্ত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপনাদের মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে যে, রাষ্ট্রের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন স্থায়ী অমুসলিম যদি নিরাপদ হয় তাহলে অনৈসলামিক রাষ্ট্র কোন অমুসলিম ইসলামী রাষ্ট্রে আসলে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা কেমন হবে বা কী হবে? আলহামদুলিল্লাহ ইসলাম কিন্তু তাদেরকেও সমান অধিকার ও কঠোরভাবে নিরাপত্তা দিয়েছে।

যদি অমুসলিম কেউ ইসলাম রাষ্ট্রে আসে তাহলে ইসলামী রাষ্ট্রের সেই ব্যক্তি অবশ্যোই ঐ ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। ইসলামী রাষ্ট্রের একজন মুসলিম ব্যক্তি আরেকজন অমুসলিম ব্যক্তিকে কঠোরভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার পর কোন মুসলিম ব্যক্তি সেই অমুসলিম ব্যক্তির কোন প্রকার ক্ষতিসাধন করতে পারবে না।

এ ব্যাপারে আলী (রাঃ) বলেন: রাসূল (রা:) হতে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল (সা:) বলেন যে মুসলমান কর্তৃক নিরাপত্তা দেওয়ার অধিকার সবার ক্ষেত্রেই সমতা বজায় রাখবে। তাই মুসলমানের দেয়া নিরাপত্তাকে যে ব্যক্তি কোন ধরনের লঙ্ঘন করবে বা করার চেষ্টা করবে, তার প্রতি মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার অভিসম্পাত।

আর সকল মানুষ ও ফেরেস্তার ইসলামী রাষ্ট্রে কোন অমুসলিম নাগরিকদের প্রতি নিশ্চিত নিরাপত্তা ও অধিকার দেওয়ার চুক্তি অনেক আগেই নিশ্চিত হয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQs)

প্রশ্নঃ মুমিন ও মুসলিমের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ মুসলিম হচ্ছে মূলত সেই ব্যক্তিকেই বোঝানো হয় যেই ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করে। অন্যদিকে, মুমিন হচ্ছে মূলত সেই ব্যক্তিকেই বোঝানো হয় যেই ইসলাম ধর্মকে বিশ্বাস ও স্বীকার করে। এরপর তা ভেতরে এবং অন্তরে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে।

প্রশ্নঃ সকল মুমিন ব্যক্তি মুসলিম, কিন্তু সকল মুসলিম ব্যক্তি মুমিন নয় কেন?

উত্তরঃ সকল মুমিন ব্যক্তি মুসলিম, কিন্তু সকল মুসলিম ব্যক্তি মুমিন নয় এর কারণ হচ্ছে যিনি ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকারোক্তি দেয় তিনি মুসলীম আর অপরদিকে যিনি ইসলাম ধর্মকে বিশ্বাস ও স্বীকার করার পাশাপাশি তা সাথে সাথে পরিপূর্ণভাবে এর নির্দেশাবলী মেনে চলে। এজন্যই সকল মুমিন মুসলিম, কিন্তু সকল মুসলিম মুমিন নহে।

প্রশ্নঃ মুসলিম শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ মুসলিম শব্দের অর্থ হচ্ছে মূলত স্ব ইচ্ছায় আত্মসমর্পণকারী অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজের ইচ্ছাকে মহান আল্লাহর কাছে স্ব ইচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে ৷

প্রশ্নঃ মুমিন বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ মুমিন শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে “বিশ্বাসী” এবং কঠোরভাবে অনুগত মুসলিমকে বোঝানো হয় যে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে ইসলামকে সকল কর্মকান্ডে ধারণ করে এবং মহান আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সমর্পণ করে থাকে। যারা নারী মুমিন রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে মুমিনা শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত সম্পর্কে শেষ মতামত

মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মুসলমান-অমুসলমান সম্পর্ক সংক্রান্ত নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত হচ্ছে মূলত নামাজ।

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেন, মুসলমান-অমুসলমান, মুশরিক-কাফের এবং মুমিন এটার প্রথমতম বাহ্যিকভাবে দৃশ্যমান পার্থক্য হচ্ছে নামাজ।

আপনার যদি মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদত সম্পর্কে কোন ধরণের প্রশ্ন কিংবা মতামত থেকে থাকে, তাহলে আমাদের অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনার প্রশ্নের বা মতামতের উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। আপনার মূল্যবান সময় অপচয় করে এতক্ষন ধরে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Comment